প্রকাশিত: ২৪/১০/২০১৬ ৮:০৩ এএম , আপডেট: ২৪/১০/২০১৬ ৯:৩১ এএম

teknaf-picb-23-10-2016জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ::
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের আধিবাসী পল্লী এখনো বিদ্যুতায়নের আওতায় আসেনি। বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় আধিবাসীদের মাঝে এক ধরণের হতাশা বিরাজ করছে। স্বাধীনতার এত বছর পরেও বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হওয়ার স্বপ্নস্বাদ পুরণ না হওয়ায় উপজেলায় বসবাসরত আধিবাসীদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের হরিখোলা, লম্বাঘোনা, আমতলী, পুটিবনিয়া, রইক্ষ্যং, দক্ষিণ কাটাখালী আধিবাসী অধ্যুষিত পল্লী। এসব পল্লীতে প্রায় ৭শতাধিক পরিবারের বসতি। তাতে ৫হাজারের অধিক মানুষ বসবাস করছে বলে জানাগেছে। পল্লী সমূহে সিংহ ভাগই চাকমা সম্প্রদায়ের লোকজনের বসতি রয়েছে। তারা বৃটিশ আমল থেকে বসবাস করে আসছে বলে আধীবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন সুত্র জানায়। আধিবাসী পল্লীর বেশীর ভাগই কৃষি কাজ করে জীবন সংসার পরিচালনা করে। তাদের ক্ষেতে উৎপাদিত ফসল উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বেছাবিক্রি হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকলে আধিবাসীদের জীবন মান আরো উন্নত হবে, পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন বাড়বে, জানিয়ে হরিখোলা গ্রামের কৃষক মনি স্বপন চাকমা দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন আমরা উন্নয়ন বঞ্চিত। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবেই আধিবাসী গ্রাম সমূহে এখনো বিদ্যুতের ছোঁয়া লাগেনি। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ধারণা, বিদ্যুতায়নের আওতায় আসলে পাহাড় এবং পাহাড়ের পাদদেশে গড়া উঠা এসব পল্লী পর্যটন শিল্পের বিকাশে যুগান্তকারী ভুমিকা রাখতে পারে। বদলে দিতে পারে হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়নের চেহারা। এসব পল্লীতে পর্যটন স্পট কুদুং গুহা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একাধিক মন্দির সহ বিভিন্ন প্রতিষ্টান রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে এসব পল্লীতে দেশ-বিদেশের লোকজনের সমাগম ঘটে। এখানকার শিক্ষা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্টানে বিদ্যুতের খুব বেশী জরুরী হয়ে পড়েছে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাষ্টার নিমং চাকমা এবং আধিবাসী নেতা আব্দুল চাকমা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় আমাদের জীবনমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসলে আধিবাসী পল্লীর চেহারা পাল্টে যাবে। অর্থনীতির উন্নয়নে এখানকার লোকজন ভুমিকা রাখতে পারবে। সরকারী-বেসরকারীভাবে উদ্যোগ পাহাড় পরিবেষ্টিত এসব আধিবাসী গ্রাম পর্যটন জোনে রুপান্তরিত হবে।

আধিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা ইউপি সদস্য বাবুধন তঞ্চগ্যাঁ জানান, আধিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকার বিষয়টি আমি সাংসদ আব্দুর রহমান বদিকে মৌখিকভাবে বলেছি। আধিবাসীদের ভাগ্যের পরিবর্তনে জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ এবং সংযোগ প্রদান করতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

জানতে চাইলে টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মো: শহীদুল্লাহ বলেন, আদিবাসী জনগোষ্টীর জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ পাওয়া তাদের সাংবিধানিক অধিকার। “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ-ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” শ্লোগানের প্রেক্ষিতে আধিবাসী সম্প্রদায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার ন্যায্য দাবীদার। এলাকাগুলো বিদ্যুতায়নের আওতায় আসতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করার কথা উল্লেখ করে তিনি আধিবাসী গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহযোগীতা দেওয়ার কথা জানান।

পাঠকের মতামত

কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় পরিচয় যাচাইহীন রোহিঙ্গা ভাড়া, বাড়ছে শঙ্কা

মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও সেনা জান্তার সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মানবিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ইউনাইটেড নেশন টিম

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইউনাইটেড নেশন ফোরাম বাংলাদেশ স্টাডি প্রোগ্রাম (BSP) এর ...

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্ম ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ

কক্সবাজারে বাল্যবিবাহ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো “বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয়” শীর্ষক আন্তঃধর্মীয় নেতৃবৃন্দের ...